নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজে’লার এখলা’শপুরে এক না’রীকে গণধ’র্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘ’টনায় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে গ্রে’ফতারের পর র্যা’ব কর্মকর্তা এএসপি নাজমুলের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে নড়াইলের এসপি মোহাম্ম’দ জসিম উদ্দিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- এএসপি নাজমুল, আমার প্রিয় সহকর্মী। র্যা’ব-১১ আমার দ্বিতীয় কর্মস্থল আর তার প্রথম। আমার স’ঙ্গেই তার কর্মজীবন শুরু। অনেক দুঃসাহসিক অ’ভিযানে আমার সহযোদ্ধা। ইতোমধ্যে বদলি হয়ে গেছে। কয়েক দিন পর হয়তো নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে যাবে।
নিজের কথা নয়, তার কথা বলছি। দায়িত্ব নিয়েই বলছি। র্যা’বের কর্মজীবনে এক বিন্দু অনিয়ম সে করেনি। তার তোলা আ’সামির স’ঙ্গে আমাদের ছবি নিয়ে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। তাতে দুঃখ নেই। আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে বিনীত অনুরোধ, ম’র্মাহত হোন, তবে বিস্তারিত জেনে হোন।
আপনারা জানেন, নোয়াখালীর এখলা’শপুরে সংঘটিত না’রীর প্রতি বীভৎস ও লোমহর্ষক যৌন হয়রানির ভিডিও প্রকাশের পর দেশব্যাপী চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। নৃ’শংস ঘ’টনায় যে কোনো মানবিক মানুষের মতো আমাদের হৃদয়েও র’ক্তক্ষরণ হয়েছে। নোয়াখালী জে’লা র্যা’ব-১১ এর অধিক্ষ’ত্রে হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমরা বি’ষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান এবং ঘ’টনায় জড়িতদের গ্রে’ফতারে অ’ভিযান শুরু করি।
সেদিন মধ্যরাতে গোপন সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘ’টনায় অ’ভিযুক্ত দেলোয়ার নোয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। কিন্তু তার ব্যবহৃত মোবাইল টি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ঘ’টনার বীভৎসতা ও নৃ’শংসতা বিবেচনা করে আমাদের অ’ভিযানের প্রতিটি সদস্য অ’ভিযুক্তদের গ্রে’ফতারে শত ক’ষ্ট মেনে নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মত দেশের ব্যস্ততম পথে চেকপোস্ট বসিয়ে বাস তল্লাসি শুরু করি।
একজন এডিশনাল এসপি ও একজন এএসপির নেতৃত্বে প্রায় ৩ ঘণ্টা বাস তল্লা’শি করে রাত আনুমানিক ২টা ৩০ ঘটিকায় স’ন্ত্রাসী দেলোয়ারকে অ’স্ত্রসহ গ্রে’ফতার করা হয়। (ছবিতে একজন অফিসারে গায়ে রিফ্লেক্টিং ভেস্ট দেখু’ন) প্রত্যেকটি ক্লান্তিকর ও ক’ষ্টসাধ্য অ’ভিযানের পর সফলতা আসলে আমাদের সকল শ্রম, শত ক’ষ্ট নিমিষেই হারিয়ে যায়।
আমাদের কাছে গোপন ত’থ্য ছিল, অ’ভিযুক্ত দেলোয়ার ঢাকায় গিয়ে প্রধান আ’সামি বাদলের স’ঙ্গে দেখা করবে। তাই আমাদেরও প্রধান টার্গেট বাদল। কিন্তু দেলোয়ারের সহযোগিতা ছাড়া ঢাকায় আত্মগোপনে থাকা বাদলকে গ্রে’ফতার কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। এদিকে আমাদের হাতে আ’টক দেলোয়ার যখন জানতে পারল আমরা র্যা’বের সদস্য, তখন সে মৃ’ত্যু ভ’য়ে কাঁপছে। তাছাড়া আমাদের দুজন জুনিয়রের আগ্রাসী আচরণে সে আরো ভীত হয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিল না।
তখন আমরা দেলোয়ার কে পেছন থেকে সামনের সিটে এনে আমাদের মাঝখানে বসাই। গাড়ি তখন ঢাকার দিকে। বাদলের অবস্থান জানার জন্য তার স’ঙ্গে উপস্থিত বুদ্ধি ও অ’ভিজ্ঞতার আলোকে নানামুখী কৌশল অবলম্বন করা হয়। দেলোয়ার বিশ্বাস করতে পারছিল না সে বেঁচে থাকবে। আমরা তার আস্থা অর্জনের জন্য চলন্ত গাড়িতে যা কিছু বলা যায়, কিংবা করা যায়, তাই করেছি। তার মধ্যে এই ছবি তোলাও একটি। এবং শেষ পর্যন্ত আমরা সফল হয়েছি।
র্যা’ব-১১ এর কর্মজীবনে এর চেয়ে বহু দুঃসাহসিক অ’ভিযান আমরা করেছি। নিষ্ঠা ও সততার স’ঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। ভবি’ষ্যতেও তাই করে যাব। সামগ্রিক ৮ ঘণ্টা অ’ভিযানের মধ্যে নেয়া আ’সামির স’ঙ্গে একটি ছবি আপনার মনে আ’ঘাত দিয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
রোববার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে একটি পি’স্তল ও দুই রাউন্ড তাজা গু’লিসহ দেলোয়ার হোসেনকে গ্রে’ফতার করে র্যা’ব-১১। সোমবার সন্ধ্যায় বেগমগঞ্জে দেলোয়ারের মাছের খামারে অ’ভিযান চা’লিয়ে সাতটি তাজা ককটেল ও ব’ন্দুকের দুটি কার্তুজ উ’দ্ধার করা হয়। বি’স্ফোরক ও গু’লি উ’দ্ধার ঘ’টনায় দেলোয়ারের রিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় মা’মলা হয়।