গত ১৮ আগস্ট বিকেলে বিদেশ ফেরত স্বা’মীকে নিয়ে বিমানবন্দরে দুই স্ত্রীর টানাহেঁচড়া ও ঝ’গড়ার ভিডিও পুরো দেশজুড়ে ভাইরাল হয়েছিল। মালদ্বীপ থেকে প্রবাসী মাঈনুল দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিজ বাড়ি কুমিল্লা যাওয়ার জন্য ভাড়া গাড়িতে উঠে বসলেই টেনে নামানোর চেষ্টা করে তার প্রথম স্ত্রী সানজিদা। তার দাবি, ৭ বছর আগে তাদের বিয়ে হলেও তাকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তার স্বা’মী। এদিকে, অবশেষে স্বা’মীকে নিয়ে দুই স্ত্রীর দ্ব’ন্দ্বের অবসান হলো। দ্বিতীয় স্ত্রীর ভাগ্যেই জুটলেন, মালদ্বীপ প্রবাসী স্বা’মী মাঈনুল।
সোমবার (২৪ আগস্ট) কুমিল্লায় এক গ্রাম্য সালিশে, প্রথম স্ত্রী’কে তালাক দেন তিনি। সমাধান হওয়ায়, সব পক্ষই সন্তুষ্ট। মাইনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী তমার দাবি ছিল, তিনিই প্রথম স্ত্রী। স্বা’মীকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে হাতাহাতি শুরু করেন সানজিদার সাথে।
আইনগতভাবে বিচ্ছেদ না হলেও সানজিদা ও তার ৩ বছরের শি’শুর কোনো ভরণপোষণ দেন না মাঈনুল। সানজিদাকে প্রথম স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করলেও তার সাথে আর সংসার করতে চান না বলেও জানান মাঈনুল। স্বা’মীকে নিয়ে দুই বউয়ের মা’রামারি আর কাড়াকাড়ি সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়ে যায়। স্বা’মীকে নিজ জিম্মায় বউদের অতর্কিত মা’রামারি আর কাড়াকাড়িতে কাহিল হয়ে পড়েন স্বা’মী মাঈনুল।
পরে তিন জনকেই থানায় পাঠিয়ে দেয় বিমান বন্দরে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ঘ’টনাটি গণমাধ্যমে বেশ আলোচনা ও সমালোচনার জ’ন্ম দেয়। পরে থানায় মুচলেকা দিয়ে তিনজনকেই ছাড়িয়ে নেন মাইনুলের চাচা। ফিরে যান কুমিল্লার দাউদকান্দিতে।
অবশেষে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বি’ষয়টি মিটমাট হয়েছে। সোমবার সকালে স্থানীয়দের নিয়ে গ্রাম্য সালিশে বসেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। সবার উপস্থিতিতে মাঈনুল তার প্রথম স্ত্রী সানজিদার সাথে থাকতে না চাওয়ায় তাকে তালাক দেন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘মাইনুল তার প্রথম স্ত্রী’কে নিয়ে ঘর-সংসার করতে রাজি না হওয়ায় আমরা সি’দ্ধান্ত নিয়ে দুই স্ত্রী’কে আলাদা করে দিয়েছি।’ মাঈনুলের চাচা আলী আহমেদ মিয়াজী বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী’কে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সফলভাবে আজকের রায় কার্যকর হয়েছে।’ আলোচিত এই ঘ’টনাটি সমাধান হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে মাঈনুল।
মাঈনুল বলেন, ‘সানজিদা আমাকে ঠিকমত সময় দিত না। এ কারণেই আমি তার কাছ থেকে সরে গেছি। অবশেষে সমাধান হওয়ায় আমার স্বস্তিবোধ হচ্ছে।’ দুই বউও অবশেষে মেনে নিয়েছেন সালিশের রায়। প্রথম বউ সানজিদা বলেন, ‘আমাদেরকে সমাধান করে দিয়েছে। আমার ভাগ্যে ছিল না, তাই আমি পাই নাই।’ দ্বিতীয় বউ তমা বলেন, ‘আমি অনেক খুশি আমার স্বা’মীকে আমি অবশেষে পেয়েছি।’